সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা সম্পূর্ণ খরচ কত ২০২৪ বিস্তারিত জেনে নিন

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত, সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে আর সুইডেন ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় এই সকল কিছু সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসা করা খুবই সহজ। কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়ায় সহজে আবেদন করা যায়।

আপনি সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা কিভাবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পাবেন, জানতে হলে আমাদের আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। কারণ সুইডেন ভিসা আবেদনের সময় যদি কোনো রকম ভুল করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি সুইডেন ভিসা নাও পেতে পারেন। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত?

সুচিপত্রঃ সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত

সুইডেনে যারা স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন করতে চান, তাদের স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসায় আসতে বাংলাদেশ থেকে কত টাকা খরচ হয়। এক নজরে দেখে নিন সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত!
  • অ্যাপ্লিকেশন ফিস : সুইডিশ ক্রোনা ৯০০ SEK। আমরা জানি বাংলাদেশী টাকায় ১ SEK সমান প্রায় ১১ টাকা ৫০ পয়সার মতো। আপনি হিসেব করবেন অ্যাপ্লিকেশন ফিস বাবদ ১২ হাজার টাকার মতো।
  • ডকুমেন্ট কোরিয়ার ফি: মাস্টার্স প্রোগ্রামে যারা ভিসার জন্য আবেদন করবেন তারা তাদের যে মাস্টার্সের ট্রান্সক্রিপ্ট টা রয়েছে এটাকে আপনার ইউনিভার্সিটি থেকে ইউনিভার্সিটি ইন ব্লপে করে অ্যাটেস্টেড করে সুইডেনে আপনাকে পাঠাতে হবে। আর এই ডকুমেন্ট গুলো কুরিয়ার করে পাঠাতে আপনাকে ৪ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
  • টিউশন ফিস : সুইডেনের টিউশন ফিস ৪০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার ক্রোনা হয়ে থাকে অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় ৫ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকা হয়ে থাকে। আর সুইডেনে টিউশন ফিস টা প্রতি সেমিস্টার অনুযায়ী হয়।এই টাকাটা আপনাকে আগেই পাঠিয়ে দিতে হবে।
  • ইন্স্যুরেন্স খরচ : সুইডেনে ইন্স্যুরেন্স ফি একদম ফ্রি। কোন ধরনের ইন্স্যুরেন্স ঝামেলা নেই। তাই এখানে আপনার কোনো টাকা খরচ করতে হবে না।
  • ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফিস : ভিসা অ্যাপ্লিকেশন করার জন্য সুইডেন ক্রোনা ১৫০০ SEK অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১৭ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকার মতো এম্বাসি ফি দিতে হবে।
অর্থাৎ যদি সব মিলে একটা হিসাব করা হয় তাহলে দেখা যাবে সুইডেনে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার আগে পর্যন্ত আপনাকে মোট ৭ লাখ থেকে ৮ লাখ টাকা মোট খরচ হবে।

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৪

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত জানা অবশ্যই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি যদি সুইডেনে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে তাহলে অবশ্যই আপনাদের কে সুইডেন ভিসা খরচ সম্পর্কে জানতে হবে। সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা হচ্ছে একটি সোনার হরিণ পাওয়ার মত। সুইডেন হচ্ছে উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেক উন্নত একটি রাষ্ট্র। ইউরোপের এই দেশটি অনেক উন্নত বিশেষ করে সুইডেনের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক ভালো। 
  • একাডেমিক রেজাল্ট: কমপক্ষে ৬০% মার্ক থাকতে হবে 
  • ব্যাচেলর প্রোগ্রাম : এসএসসি এবং এইচএসসিতে কমপক্ষে 3.00 - 3.50 পয়েন্ট থাকতে হবে।
  • মাস্টার্স প্রোগ্রাম: অন্তত ২.৫০ থেকে ২.৭৫ থাকতে হবে
  • IELTS স্কোর : ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য ৬.০ স্কোর এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ৬.৫ স্কোর থাকা লাগবে।
আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেন যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সকল বিষয় গুলোকে মাথায় রাখতে হবে। তাছাড়া স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেন গেলে আপনি অনেক ধরনের কাজের সুযোগ পাবেন। পার্ট টাইম জব করেই নিজের টিউশন ফিস দিতে পারবেন।

সুইডেন ভিসা আবেদন

সুইডেন ভিসা আবেদন প্রসেস অনেকটাই সহজ। একটি পোর্টালের মাধ্যমে চারটি প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন। আর এই চারটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশন করার জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন ফি যথেষ্ট। তাই আমাদের প্রথম যে খরচটি শুরু হয় সেটি ভিসা আবেদন এপ্লিকেশন ফিস দিয়ে। এই অ্যাপ্লিকেশন ফিস হচ্ছে সুইডিস ক্রোনা যেটিকে SEK বলে। সুইডেন ভিসা আবেদন যেভাবে করবেন দেখে নিন।
  • উচ্চশিক্ষার জন্য ভিসা আবেদন করলে আপনাকে রেডিয়েন্স পারমিট এর জন্য আবেদন করতে হবে। রেডিয়েন্স পারমিট করে নিলে আপনি তিন মাসের বেশি সময় পর্যন্ত সুইডেনে অবস্থান করতে পারবেন। কারণ সাধারণ ভিসায় তিন মাসের বেশি সময় পর্যন্ত সুইডেনেঅবস্থান করা যায় না।
  • এজন্য আপনাকে অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের জন্য আপনাকে অবশ্যই https://www.migrationsverket.se/manageaccount/ এই লিঙ্কে ঢুকে ওয়েবসাইটে সকল তথ্য ডকুমেন্ট সঠিক ও নির্ভুল প্রদান করতে হবে। 

সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে

স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেন যেতে আপনাকে সকল খরচ মিলিয়ে সুইডিশ ক্রোনা ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার SEK অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার মতো খরচ হবে। এই টোটাল খরচ হিসাব করা হয়েছে ভিসা আবেদন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি এবং বিমান ভাড়া সহ সবকিছু মিলিয়ে।

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা করতে কি কি লাগে 

সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসায় আপনাকে বেশ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে। এইগুলো নিচে দেওয়া হলঃ   
  • স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদন করলে উচ্চ মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট লাগবে 
  • মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদন করলে চার বা অনার্স সহ ৩ বছরের স্নাতক ডিগ্রির সার্টিফিকেট 
  • ইংরেজি ভাষার দক্ষতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে IELTS এ মোট স্কোর ৬.৫ এবং কোন বিভাগে ৫.৫ এর কম পাওয়া যাবে না। তাছাড়া টয়ে ফল ইন্টারনেট ভিত্তিক স্কোর ২০ এবং মোট স্কোর ৯০ থাকতে হবে। তাছাড়া যারা ইংলিশ মিডিয়াম অর্থাৎ আপনি যদি স্নাতকে চার বছর ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেন তাহলে আপনার IELTS আলাদা করে লাগবেনা।
  • একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট 
  • সিভি বা পোর্টফোলিও 
  • লেটার রেকমেন্ডেশন 
  • লেটার মোটিভেশন

সুইডেন ভিসার জন্য যেসব কাগজ লাগে

  • অরিজিনাল পাসপোর্ট এবং অবশ্যই পাসপোর্ট এর এক্সপায়ার ডেট যেন অন্তত ছয় মাস থাকে। 
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি - অবশ্যই ইউরো ফরমেটে হতে হবে ৭৫% ফেইস এবং ২৫ পার্সেন্ট বডি 
  • সকল একাডেমিক মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট। যারা শুধুমাত্র মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হবে তারা ব্যাচেলর সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট দিয়েই ভর্তি হতে পারবেন।
  • ইংলিশ প্রফিসিয়েন্সি টেষ্ট: IELTS 6.00 - 6.50
  • সিভি - ইউরোপাস 
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট - ১৩ থেকে ১৫ লাখ টাকা দেখাতে হবে। অন্তত শেষ চার মাসের লেনদেন সম্পর্কে বিস্তারিত দেখাতে হবে। 
  • স্টেটমেন্ট অফ পারপাস
  • জব এক্সপিরিয়েন্স সার্টিফিকেট 
  • হেলথ ইন্সুরেন্স 
  • এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিস সার্টিফিকেট

সুইডেন উচ্চশিক্ষা আবেদন প্রক্রিয়া

সুইডেন উচ্চশিক্ষা আবেদন প্রক্রিয়া এক নজরে দেখে নিনঃ
  • সুইডেন শিক্দে প্রতিষ্ঠানগুলোতে মোট তিনটি প্রোগ্রামে স্টুডেন্টদের কে এডমিশন করে থাকে এডমিশন করে থাকে। এইগুলো হচ্ছে ব্যাচেলর প্রোগ্রাম, মাস্টার্স প্রোগ্রাম এবং পিএইচডি প্রোগ্রাম।
  • সুইডেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুইটি ইনটেক্স রয়েছে একটি হচ্ছে সেপ্টেম্বর এবং আরেকটি হচ্ছে জানুয়ারি। মূলত সেপ্টেম্বরের ইনটেক্স এ আপনারা যদি এডমিশনের জন্য আবেদন করে থাকেন তাহলে মোটামুটি সব ধরনের সাবজেক্ট এবং সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করতে পারবেন এবং জানুয়ারির ইনটেক্স এ কিছু সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের এডমিশন চালু রাখে এতে করে পছন্দ মতো সাবজেক্ট পার্ট টিউশন পাওয়া যায় না। তাই সেপ্টেম্বরে এডমিশন নেওয়াটা আপনাদের জন্য ভালো হবে।
  • সেপ্টেম্বরে এডমিশন নিলে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে ১৫ জানুয়ারি থেকে।
  • আর জানুয়ারিতে এডমিশন নিলে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে আগস্ট ১৫ তারিখের পর থেকে।
  • স্নাতক ও মাস্টার্সে যে কোন প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার জন্য আপনাকে অনলাইনে { www.universityadmissions.se/intl/start } এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
আপনি সুইডেন উচ্চশিক্ষা আবেদন করার ক্ষেত্রে যদি আপনার পছন্দ অনুযায়ী সাবজেক্ট বা টিউশন নিতে চান তাহলে অবশ্যই সেপ্টেম্বরে এডমিশন নিতে পারেন। যার ভর্তি কার্যক্রম ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে।

শেষ কথা

পরিশেষে একটা কথা বলতে চাই, আজকের আর্টিকেলটির মূল বিষয় ছিল সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা খরচ ক্‌ সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে, সুইডেনে উচ্চশিক্ষার আবেদন প্রক্রিয়্‌ সুইডেন ভিসা আবেদন, স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেন যেতে কত টাকা লাগ্‌ সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসা করতে কি কি লাগে এই সকল কিছু সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়া হয়ছে।

যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার কোন উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবেন। আর যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে কমেন্টে অবশ্যই উল্লেখ করে দেবেন। ধন্যবাদ💜

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url