ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা মানব দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ফাইবার থাকে। তাছাড়া ড্রাগন ফলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা রয়েছে কারণ বাচ্চার মানসিক বিকাশ ও মায়ের শরীর সুস্থ রাখার জন্য এই ফলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

 এছাড়াও ড্রাগন ফল আমাদের শরীরের যে অসংখ্য ক্যান্সার সেল রয়েছে এই সেলগুলোকে একটিভ করতে বাধা দেয়। তাই বোঝাই যাচ্ছে ড্রাগন ফল আমাদের শরীরের জন্য কতটা পুষ্টি সমৃদ্ধ ও উপকারী একটি ফল। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা গুলো। 

সূচিপত্র : ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ উপকারিতা 

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ 

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যেটা কিনা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়া ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আইরন ও ফাইবার যা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ড্রাগন ফল শরীরের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ড্রাগন ফলটি যাদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের বড় বড় রোগ রয়েছে তারাও এ ফলটি খেতে পারবে। 

কারণ এই ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ রয়েছে। যেগুলো কিনা শরীরের ক্ষতিকর যে সেলগুলো রয়েছে সেইগুলো বাধাগ্রস্ত করে এবং নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে। ড্রাগন ফল দিতে রয়েছে ভিটামিন এ ভিটামিন সি ওমেগা-3 , ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস, যা রোগ প্রতিরোধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। 

ড্রাগন ফলের উপকারিতা

ড্রাগন ফলের উপকারিতা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরের নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে। তাছাড়া ড্রাগন ফলের মধ্যে আরো অনেক উপকারী গুণাগুণ রয়েছে। আর সেগুলো হচ্ছে: যে ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের পরিবর্তন হয়ে হজম শক্তিকে ঠিক রাখে অর্থাৎ হজম শক্তি বহুগুনে বাড়িয়ে তোলে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেয় না। 

ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আইরন ভিটামিন বি২ এবং ক্যালসিয়াম থাকে যে টি কিনা শরীরের ক্যান্সার হতে দেয় না। অর্থাৎ ক্যান্সারের যে সেলগুলো থাকে তা বিশেষভাবে বাধাগ্রস্ত করে। আর এই ফল শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক পদার্থ গুলো শরীর থেকে বের করতে সহায়তা করে। যার ফলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। 

এছাড়াও ড্রাগন ফলের মধ্যে এমন কিছু পুষ্টি গুণ রয়েছে যেগুলো চুল ঝরে পড়া কমায় এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকার কারণে আমাদের শরীর সতেজ রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেও ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া ড্রাগন ফল এমন একটি ফল যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায় যা ত্বকের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ড্রাগন ফলের উপকারিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ 

কারণ ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে খনিজ ও ভিটামিন থাকে যার রক্তের সুগারকে কমাতে সহায়তা করে। আর ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তে সুগারের পরিমাণ যত কম হবে রোগীর শরীর তত বেশি ভালো থাকবে। তাছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ড্রাগন ফলটি শরীরে শরীরে ইনসুলিন তৈরি করতে সহায়তা করে। এতে করে রোগীদের শরীরে সুগারের মাত্রা কমে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পরামর্শ থাকবে প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে ড্রাগন ফলটি খাওয়ার। 

এতে করে আপনার শরীর সুস্থ ও সবল থাকবে। তাছাড়া আরও অন্যান্য রোগের সমস্যা থাকলেও ড্রাগন ফলটি খাওয়ার শরীরের জন্য উপকারী। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে যেসব ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ভরের উপকারিতা রয়েছে ব্যাপক। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ। আর এই পুষ্টি গুনাগুন মা ও শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় এই ফলটি হতে পারে একটি কার্যকরী ও পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল। গর্ভাবস্থায় মায়েদের নানা রকমের সমস্যা দেখা দেয়। আর এই সমস্যাগুলো বিভিন্ন ধরনের আয়রন ও ফাইবার সহ বিভিন্ন কারণে দেখা দেয়। আর ড্রাগন ফলটি খাওয়ার মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 

তাছাড়া নানা ধরনের পুষ্টিগুণ গর্ভে থাকা বাচ্চার মানসিক বিকাশ ঘটাতেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে নানা ধরনের পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। যেমন ভিটামিন খনিজ রক্তশূন্যতা সহ আরও অন্যান্য সমস্যা। ড্রাগন ফল হচ্ছে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও আইরন। তাছাড়া গর্ভবতী মায়েদের যাদের নানা ধরনের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তারা খুব সহজেই ড্রাগন ফলটি খেতে পারেন। ড্রাগন ফলটি খাওয়ার মাধ্যমে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা খুব সহজেই দূর হবে। 

তাছাড়া যাদের রক্ত শূন্যতা দেখা দেয় তারা চাইলে এ ফলটি নিয়মিত খেতে পারেন। এ ফলের মধ্যে থাকা একটি গুনাগুন শরীরের রক্তশূন্যতা কমাতে সহায়তা করে। যার ফলে শরীরে রক্তের সঞ্চালন বা রক্ত তৈরি হয়। তাই গর্ভাবস্থায় মায়েদের কে ড্রাগন ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। 

বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা 

বাচ্চাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও রয়েছে ব্যাপক। কারণ বাচ্চাদের মানসিক বিকাশ ঘটাতে ড্রাগন ফলটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শিশুদের মানসিক বিকাশে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রয়োজন হয় যেটি কিনা ড্রাগন ফলের মাধ্যমে গ্রহণ করা সম্ভব। ড্রাগন ফল খাওয়ার মাধ্যমে শিশুদের শরীরের বিকাশ ঘটবে। যেসব শিশুরা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিহীনতার সমস্যায় ভোগে তাদের জন্য ড্রাগন ফলটি একটি উপকারী হতে পারে। 

এছাড়াও বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন রক্তশূন্যতা সর্দি কাশি স্নায়ু জনিত নানা ধরনের সমস্যা থাকে এই সমস্যা গুলো দূর করনে ড্রাগন ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দাগন ফলের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ , আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার আরো অনেক ধরনের গুণাগুণ থাকে। যেগুলো বাচ্চাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম 

ড্রাগন ফল খাবার তেমন কোন ধরা বাঁধা নিয়ম নেই। আপনি চাইলে যেকোনো সময় ড্রাগন ফল খেতে পারেন। ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফাইবার ও আয়রন। তাই আপনি আপনার সুবিধামতো ড্রাগন ফলটি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। নিয়মিত ড্রাগন ফলটি খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহু অংশে বেড়ে যাবে। শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হবে। তাছাড়া মানসিকভাবেও অনেকটা সচ্ছন্দ বোধ করবেন। 

তাই ড্রাগন ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ড্রাগন ফল সাধারণত ভিতরে থাকা অংশটি খেতে হয়। ড্রাগন ফলের উপরে যে খোসাটি থাকে তা সাধারণত সবুজ অথবা লাল রঙের হয়ে থাকে। এবং ভিতরে যে অংশগুলো থাকে সেটিও দেখতে লাল এবং এর মধ্যে কালোজিরার মত ছোট ছোট অনেকগুলো বীজ দানা থাকে। যেগুলো আমাদের শরীরের হজম প্রক্রিয়া বাড়াতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে ড্রাগন ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।

ড্রাগন ফল কত টাকা কেজি ২০২৪

ড্রাগন ফল কত টাকা কেজি এটি আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না। বর্তমানে ড্রাগন ফলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ড্রাগন ফল বাংলাদেশেই চাষ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই চাষীরা ড্রাগন ফল চাষের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছেন। দেশে বহু অঞ্চলে ড্রাগন ফলের বাগান গড়ে উঠেছে। আর যেহেতু বর্তমানে যেহেতু বর্তমানে ড্রাগন ফলের বাগানের সংখ্যা এবং এবং চাষ ভালো হচ্ছে সেহেতু ড্রাগন ফল বাজারে খুব কম দামের মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। 

বর্তমান ২০২৪ সাল অনুযায়ী আপনি ফলের যে কোন দোকানে ১ কেজি ড্রাগন ফল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় পেয়ে যাবেন। এছাড়া অঞ্চল ও এলাকা ভেদে ড্রাগন ফলের দাম কম বেশি হতে পারে। দাম যেমনই হোক না কেন আপনি যদি এই ফলটি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুনে বেড়ে যাবে। 

শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায় যে, আপনি যদি ড্রাগন ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারী হবে। কারণ ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফাইবার বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন ইত্যাদি। আপনি যদি নিয়মিত খাবারে এটি খেতে পারেন তাহলে আপনার হজম শক্তি বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে। তাই শরীর ভালো রাখতে নিয়মিত ড্রাগন ফল খেতে পারেন। যা থেকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url