চাকরির পাশাপাশি অল্প পুঁজিতে যেসব ব্যবসা করা যায়

চাকরির পাশাপাশি অল্প পুঁজিতে যেসব ব্যবসা করা যায় তা আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে চলেছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের চাকরি করে খুব বেশি অর্থ আয় করা সম্ভব হয় না। তাই বেশিরভাগ মানুষের চাহিদায় থাকে চাকরির পাশাপাশি অন্য কি উপায়ে ইনকাম করা যায়।

আর সেই মাধ্যমটি হচ্ছে একটি ব্যবসা। আপনি যদি সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে এটি আপনার জন্য খুবই সুফল বয়ে আনবে। তাই চলুন দেরি না করে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে জেনে নেওয়া যাক চাকরির পাশাপাশি অল্প পুঁজিতে কয়েকটি ব্যবসার আইডিয়া।

পোস্ট সূচীপত্র: চাকরির পাশাপাশি অল্প পুঁজিতে যেসব ব্যবসা করা যায়

হাঁস মুরগি পালন করে ইনকাম

বর্তমান সময়ে হাঁস মুরগি পালন করে প্রচুর পরিমাণে অর্থ ইনকাম করা সম্ভব। আমরা যদি চাকরির পাশাপাশি অর্ধেক সময় হাঁস মুরগি পালনে সময় দিয়ে থাকি তাহলে হাঁস মুরগি পালন করে আমরা ভালো পরিমাণ করতে পারব। কারণ হাঁস মুরগি মানুষের সব সময় খাবারের পছন্দ তালিকার শীর্ষে থাকে। আপনি যদি মানুষের এই চাহিদাকে পুঁজি করে হাঁস-মুরগি উৎপাদন করতে পারেন এবং তা বাজারে বিক্রি করতে পারেন তাহলে এখান থেকে ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করা যাবে।

আপনি হয়তো জানেন জানেন না গ্রামে মানুষ হাঁস মুরগি পালন করে এবং তা বাজারে বিক্রি করে। এভাবেই তাদের পোষা প্রাণী বৃদ্ধি করার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। তাই তাই আপনি যদি চাকরির পাশাপাশি কোন একটি ব্যবসা বা কোন কিছু করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই হাঁস মুরগি পালন করতে পারেন। এতে এতে আপনার চাকরির পাশাপাশি আরেকটি বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। 

পুকুরে মাছ চাষ করে ইনকাম 

আপনি যদি চাকরি করেন আর আপনার যদি নিজস্ব কোন পুকুর থেকে থাকে তাহলে আপনি সেই পুকুরে মাছের পোনা কিনে এনে পুকুরে চাষ করতে পারেন। এখন খুব কম খরচে বিভিন্ন হ্যাচারি থেকে মাছের পোনা খুব কম সময়ে সংগ্রহ করা যায়। তাছাড়া আপনি যদি ফেসবুকে বা বিভিন্ন গ্রুপে খোঁজখবর নেন তাহলে আরো ভালো দিকনির্দেশনা পাবেন।

আর মাছের পোনা চাষ করতে আপনাকে খুব বেশি সময়ও দায়ী করতে হবে না। আপনি চাকরির পাশাপাশি আপনার পুকুরে মাঝেমধ্যে দেখাশোনা করলেই হবে। আরো কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করতে হবে যাতে আপনার মাছ সঠিক পুষ্টি চাহিদাটা পূরণ হয়। আর এইভাবে যদি আপনি সঠিকভাবে আপনার মাছের পোনাগুলো পরিচর্যা করতে পারেন তাহলে খুব কম সময়ে মাছগুলো বাজারজাত করতে পারবেন।

আর মাছ বিক্রির মাধ্যমে ভালো পরিমাণ একটি অর্থ আয় করতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনার আরো একটি কর্মসংস্থান তৈরি হবে। 

ফুলের বাগান চাষ করে ইনকাম 

আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা যে বাজারে ফলের চাহিদার মত ফুলেরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি একটি লক্ষ্য করেন আপনার আশেপাশে যত ফুলের দোকান রয়েছে সে ফুলের বেচা বিক্রি। আপনি যদি এটা নিশ্চিত করতে পারেন যে আপনি এই দোকানগুলোতে ফুল চাষ করে পাইকারিভাবে বিক্রি করতে পারবেন তাহলে ফুল চাষ আপনার জন্য একটি ভালো ব্যবসায়িক আইডিয়া হতে পারে। 

কারণ একটি ফুল সর্বনিম্ন হলেও দশ টাকা করে বিক্রি হয়। আপনি যদি একটি বাগান তৈরি করতে পারেন। তাহলে সেই বাগান থেকে ফুলো বিক্রি করতে পারবেন আবার ছাড়াও বিক্রি করতে পারবেন। এখানে আপনার দুই দিক থেকে লাভ হচ্ছে। আর এখানে আপনাকে খুব একটা সময় ব্যয় করতে হবে না। 

আপনি চাইলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আপনার ফুলগুলো বিক্রি করতে পারেন অথবা যাদেরকে আপনি বিক্রি করবেন তাদেরকে বললেই ওরা আপনার ফুল বাগান থেকে কিনে নিয়ে যাবে। তাই আপনি যদি মনে করেন বাগান চাষ করবেন তাহলে ফুল চাষ করতে পারেন। এতে করে আপনার একটি নিজস্ব কর্মসংস্থান তৈরি হবে। 

ফটোকপি ও স্টুডিওর দোকান 

বর্তমান সময়ের ফটোকপি ও স্টুডিও দোকানের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কারন আমাদের প্রতিদিন বিভিন্ন দরকারে কাগজপত্র ফটোকপি করতে হয়। আর এই ফটোকপি গুলো করা হয় বিভিন্ন ফটোকপির দোকান বা স্টুডিওতে। আপনি যদি লক্ষ্য করে দেখেন এই দোকানগুলোতে কি পরিমাণ কাস্টমার সব সময় থাকে। 

আপনি নিজেও হয়তো স্টুডিওতে গিয়ে সিরিয়ালে দাঁড়াতে হয়েছে। আর আপনি যদি মনে মনে ভেবে থাকেন এ কাজটি আপনি পারবেন তাহলে কোন চিন্তাভাবনা না করেই ফটোকপি ও স্টুডিওর দোকান দিতে পারেন। স্টুডিও বলতে আপনি সেখানে ক্যামেরার মাধ্যমে পাসপোর্ট সাইজের ছবি বের করে দিতে পারবেন। 

তাই এখানে আপনার ফটোকপি থেকেও আয় হচ্ছে আবার স্টুডিও থেকেও আয় হচ্ছে। তাই লক্ষ্য যদি আপনার হয়ে থাকে আপনি একজন ব্যবসায়িক বা দোকানে হবেন তাহলে আপনি খুব ভালোভাবে এই ফটোকপি ও স্টুডিওর দোকানটি দিতে পারেন। 

কাগজের ঠোঙ্গা বিক্রি করে ইনকাম 

আপনি হয়তো বিভিন্ন হোটেলে মুদির দোকানে ফলের দোকানে দেখে থাকবেন আপনি কোন পণ্য কিনলে সেই পণ্যটি আপনাকে কাগজের ঠোঙ্গার মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। এই ঠোঙ্গা গুলা কিন্তু কোন মেশিনের মাধ্যমে হয় না। এই ঠোঙ্গা গুলো সাধারণত আপনার আমার মত লোকেরা বানিয়ে বাজারে বিক্রি করে। 

আর এই কাজটি যদি আপনি শিখতে পারেন তাহলে আপনি আপনার এলাকায় এই কাগজের ঠোঙ্গা গুলো বিভিন্ন দোকান বা হোটেলে বিক্রি করতে পারেন। আপনি এই ঠোঙ্গা গুলো পাইকারি দেওয়ার হিসেবে বাজারে বিক্রি করতে পারেন। এই ঠোঙ্গা গুলো আপনি আপনার ফ্রি সময়ে করতে পারেন। তারমানে আপনি যখন চাকরি থেকে বাসায় আসবেন তারপর কোন এক ফাঁকা সময়ে এই ঠোঙ্গা গুলো তৈরি করতে পারেন। 

আর নির্দিষ্ট পরিমাণ হয়ে গেলেই তা আপনি নিজেই বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে পারবেন। তাই পরামর্শ থাকবে আপনি কাগজের ঠোঙ্গা বিক্রি করে খুব সহজে একটি ইনকাম মাধ্যম তৈরি করতে পারেন। 

শপিং ব্যাগ তৈরির করে ইনকাম 

আপনি হয়তো দেখেছেন কোন কাপড়ের দোকান নিয়ে গেলে আপনাকে সে কাপড়টি শপিং ব্যাগে দেওয়া হয়। আর এই শপিং ব্যাগগুলো যদি আপনি নিজে তৈরি করতে পারেন আর সেই গুলো যদি মার্কেটে সাপ্লাই দিতে পারেন। তাহলে আপনি একজন সফল ব্যবসায়ী হতে পারবেন এই শপিং ব্যাগ তৈরির প্রসেস খুবই সাধারণ। 

আপনি চাইলে নিজেও করতে পারেন অথবা দুই তিন জন কর্মচারীর মাধ্যমেও এই ব্যাগগুলো তৈরি করে নিতে পারেন এবং তা বিভিন্ন কাপড়ের দোকান মুদির দোকানে পাইকারি দামে বিক্রি করতে পারেন। শপিং ব্যাগ তৈরিতে খুব বেশি টাকা ইনভেস্ট করতে হয় না। খুব সামান্য টাকা দিয়েই এই ব্যবসাটি শুরু করা যায়। আর ব্যবসায় ইনকামটাও খুব দ্রুত চলে আসে। 

শেষ কথা 

পরিশেষে আপনাকে একটা কথাই বলতে চাই আপনি যদি চাকরির পাশাপাশি অল্প পুঁজির মাধ্যমে কোন ব্যবসা দার করাতে বা করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রমী হতে হবে। কারণ আপনি যেই ব্যবসায় করেন না কেন আপনাকে ধৈর্যশীল ও পরিশ্রম হতেই হবে তা না হলে আপনি কোনভাবেই সফল হতে পারবেন না। 

তাই আমার অনুরোধ থাকবে আপনি যে ব্যবসাটি শুরু করতে চান সেটি মনোযোগ দিয়ে শুরু করুন এবং ধৈর্য ধরুন। দিনশেষে আপনি যদি একটি ভালো সময় অতিবাহিত করতে পারেন তাহলে দেখবেন পরবর্তীতে আপনাকে অতটা শ্রম দিতে হচ্ছে না। আর এই ব্যবসা গুলো চাকরির পাশাপাশি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ধন্যবাদ 💗

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url